৯৮ নং অনুরাগ গৌরীপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বারবার অনিয়ম, শিক্ষা বিভাগের নীরব ভূমিকা
-
প্রতিনিধি
-
আপডেট সময়:
০৪:২৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
- 62

খান বশির
উপজেলার ৯৮ নং অনুরাগ গৌরীপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের অনিয়ম এখন নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টির অবস্থান নলছিটি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনুরাগ এলাকায়। বারবার অভিযোগ উঠলেও শিক্ষা বিভাগ থেকে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এর আগেও এই স্কুলে হেডমাস্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসলেও তা কোন এক অদৃশ্য কারণে থেমে যায়।
রমজান মাসে বন্ধ থাকার পর আজ বিদ্যালয়টি প্রথমবারের মতো খোলা হয়। কিন্তু খোলার দিনেই পূর্বের মতো অনিয়ম শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বলেন দুপুর ২ টার দিকে স্কুল তালাবদ্ধ করে সব শিক্ষকরা চলে যায়। উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, কেউ কেউ দেরিতে আসছেন, আবার ক্লাস নেয়ার আগ্রহও নেই। অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসলেও তাদের বসিয়ে রাখা হয়, ক্লাস কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হয় না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জলিল বলেন, “এটা নতুন কিছু না। আগে বহুবার এমন অনিয়ম হয়েছে। আমরা নলছিটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ তিনি নেননি। শুধু আশ্বাস দিয়ে থেমে যান। এতে করে শিক্ষকদের আরও সাহস বেড়ে গেছে।”
অভিভাবকরা জানান, স্কুলের পরিবেশ দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। কোনো রকম তদারকি নেই, নেই দায়বদ্ধতা। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা এখন উদ্বিগ্ন। একজন অভিভাবক জানান, “আমার সন্তান প্রতিদিন স্কুলে যায়, কিন্তু বাসায় এসে বলে, ক্লাসই নেয়নি। আমরা কোথায় যাবো বিচার চাইতে?”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, “অনেক সময় শিক্ষকরা একে অন্যের দায়িত্বে ক্লাস ফেলে রাখে। কেউ কেউ নিয়মিত আসে না, অথচ বেতন ঠিকই তোলা হয়। স্কুলে নিয়মিত মনিটরিং বা পরিদর্শন না থাকায় এসব চলছেই।”
এই বিষয়ে নলছিটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টি শুনেছি, আমি খতিয়ে দেখবো।” তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি পূর্বেও একই কথা বলেছিলেন, কিন্তু ফলাফল শূন্য।
শিক্ষা যেমন একটি জাতির মেরুদণ্ড, সেই শিক্ষাক্ষেত্রে এমন অনিয়ম যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এই বিদ্যালয়ের অনিয়ম বন্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।