নলছিটিতে সাবরেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলিল লেখকদের কর্মবিরতি—দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
-
প্রতিনিধি
-
আপডেট সময়:
০৫:৩১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
- 51

খান বশির
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার নাহিদ জাহান মুনার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ তুলে কর্মবিরতি পালন করছে দলিল লেখক সমিতি। রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে তারা সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে জমি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।
নলছিটি পৌরসভার গৌরিপাশা এলাকার বাসিন্দা খোকন হাওলাদার ও টিপু সিকদার অভিযোগ করে বলেন, “আমরা জমির দলিলের জন্য সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এসেছিলাম। কিন্তু দলিল লেখকরা কার্যক্রম বন্ধ রাখায় দলিল করতে পারিনি। তাদের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।”
দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে নাহিদ জাহান মুনা নলছিটি সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যোগদানের পর থেকেই তিনি দলিল লেখকদের কাছ থেকে শ্রেণিভেদে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে আসছেন। দাবি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হলেও, তিনি জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের অহেতুক হয়রানি করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, সপ্তাহে পাঁচদিন অফিস করার কথা থাকলেও তিনি নিয়মিত অফিস করেন না। অনেক সময় টানা দুইদিনও অফিসে পাওয়া যায় না তাকে।
এ বিষয়ে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন লিটন বলেন, “সাবরেজিস্ট্রার মুনা দলিল লেখকদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। তাই আমরা সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। তার আচরণ পরিবর্তন না হলে এই কর্মবিরতি চলতেই থাকবে।”
অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবরেজিস্ট্রার নাহিদ জাহান মুনা। তিনি বলেন, “একজন দলিল লেখক ভুয়া তথ্য দিয়ে, এমনকি ভোটার আইডি কার্ড এডিট করে দলিল করতে এসেছিল। আমি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নিয়মিত অফিস করি এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করি। যারা দায়িত্বহীনভাবে কাজ করতে চান, তারাই বাধা সৃষ্টি করছেন।”
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা রেজিস্ট্রার মো. মহসিন বলেন, “এখন পর্যন্ত দলিল লেখকরা কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় দলিল সংক্রান্ত কাজ থমকে গেছে। এতে নলছিটি উপজেলার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।