নলছিটিতে প্রাথমিক শিক্ষার করুণ চিত্র: নিয়মিত শিক্ষক না থাকায় বন্ধের পথে ক্লাস
-
প্রতিনিধি
-
আপডেট সময়:
০৫:৩২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- 47

খান বশির
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ১৫নং হয়বৎপুর বসুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে নিয়মিত শিক্ষক না থাকায়। গতকাল ৩০ এপ্রিল সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচজন শিক্ষক নিযুক্ত থাকলেও মাত্র দুজন উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিনজনের কোনো খোঁজ নেই। সারা স্কুলে দুইজন মাত্র স্টুডেন্ট।
হাজিরা খাতা দেখাতে অনুরোধ করলে উপস্থিত এক শিক্ষক জানান, “হাজিরা অফিসে দেখানো হবে।”
স্থানীয় এক বাসিন্দা, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, “এখানে শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করেই স্কুল চলছে। কে ক্লাস নিল, কে এল না, সেই খোঁজ কেউ রাখে না। শিশুরা প্রতিদিন ঠিকমতো আসে, কিন্তু তাদের পড়ানো হয় না। ফলে অনেক অভিভাবকই এখন আর শিশুদের স্কুলে পাঠাতে চান না।”
নলছিটি উপজেলার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সরকার এক একটি স্কুলে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করলেও তার ফলাফল কিছুই হচ্ছে না, শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকেন না, সঠিক সময়মতো ক্লাস নেওয়া হয় না। অনেক সময় দেখা যায়, পুরো সপ্তাহেও কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি শুধু বলেন, “বিষয়টি দেখছি।” স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, আগেও একই সমস্যার কথা জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
অভিভাবকদের ভাষ্য, “শিক্ষা ছাড়া আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নেই। এইভাবে চলতে থাকলে তারা কিছুই শিখবে না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকটের মূল কারণ প্রশাসনিক তদারকির অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব এবং দায়হীনতা। এখনই পদক্ষেপ না নিলে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নিয়মিত তদারকি, শিক্ষক উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা,এই তিনটি পদক্ষেপই পারে শিশুদের মৌলিক অধিকার ‘শিক্ষা’ নিশ্চিত করতে।