০১:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

শহীদ সেলিম তালুকদারের কন্যার দায়িত্ব নিলো জামায়াতে ইসলামী

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময়: ০১:০০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • 118

খান বশির বিডি ক্রাইম এলার্ট 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ সেলিম তালুকদারের নবজাতক কন্যার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকায় সেলিম তালুকদারের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এ ঘোষণা দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান।

ড. শফিকুর রহমান বলেন, “এই শিশুটির পরিবারের দেওয়া নাম রোজা। আমরা ওর নাম দিচ্ছি সাইমা সেলিম। তার বড় হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী তার লেখাপড়া, চিকিৎসা ও বিয়েসহ যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে। আমরা তাকে পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং তার পাশে থাকব।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষ অন্যের দুঃখ-দুর্দশায় এগিয়ে আসবে। শহীদদের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার এবং শহীদ পরিবারের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যে শহীদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী তৌফিক অনুযায়ী সবসময় শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে।”

সেলিম তালুকদার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার টিঅ্যান্ডটি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডে সহকারী মার্চেন্ডাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম ছিলেন মেজো এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

গত বছরের ১৮ জুলাই কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। টানা ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩১ জুলাই রাতে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমান চুন্নুর মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেছিলেন সেলিম। স্বামীর মৃত্যুর চার দিন পর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, সুমি অন্তঃসত্ত্বা।

গত ৮ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সুমির কোলজুড়ে কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তবে, সন্তানের জন্মের আগেই সেলিম তার বাবা হওয়ার সুখবর জানতে পারেননি।

সেলিম তালুকদারের মৃত্যুর পর তার পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়ে। জামায়াতে ইসলামী তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নবজাতক সাইমা সেলিমের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে দলটি মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে, যা পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে।

শহীদ সেলিমের পরিবারের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেছেন, জামায়াতে ইসলামীর এ সহযোগিতা তাদের শোক সামলাতে এবং শিশুটির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়ক হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

বাকেরগঞ্জে ট্রাক, সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১ হাইওয়েতে অবৈধ পার্কিংকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা

শহীদ সেলিম তালুকদারের কন্যার দায়িত্ব নিলো জামায়াতে ইসলামী

আপডেট সময়: ০১:০০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

খান বশির বিডি ক্রাইম এলার্ট 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ সেলিম তালুকদারের নবজাতক কন্যার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকায় সেলিম তালুকদারের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এ ঘোষণা দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান।

ড. শফিকুর রহমান বলেন, “এই শিশুটির পরিবারের দেওয়া নাম রোজা। আমরা ওর নাম দিচ্ছি সাইমা সেলিম। তার বড় হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী তার লেখাপড়া, চিকিৎসা ও বিয়েসহ যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে। আমরা তাকে পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং তার পাশে থাকব।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষ অন্যের দুঃখ-দুর্দশায় এগিয়ে আসবে। শহীদদের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার এবং শহীদ পরিবারের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যে শহীদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী তৌফিক অনুযায়ী সবসময় শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে।”

সেলিম তালুকদার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার টিঅ্যান্ডটি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডে সহকারী মার্চেন্ডাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম ছিলেন মেজো এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

গত বছরের ১৮ জুলাই কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। টানা ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩১ জুলাই রাতে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমান চুন্নুর মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেছিলেন সেলিম। স্বামীর মৃত্যুর চার দিন পর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, সুমি অন্তঃসত্ত্বা।

গত ৮ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সুমির কোলজুড়ে কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তবে, সন্তানের জন্মের আগেই সেলিম তার বাবা হওয়ার সুখবর জানতে পারেননি।

সেলিম তালুকদারের মৃত্যুর পর তার পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়ে। জামায়াতে ইসলামী তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নবজাতক সাইমা সেলিমের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে দলটি মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে, যা পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে।

শহীদ সেলিমের পরিবারের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেছেন, জামায়াতে ইসলামীর এ সহযোগিতা তাদের শোক সামলাতে এবং শিশুটির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়ক হবে।