বিডি ক্রাইম ডেক্স
বরিশাল আদালতের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে ছাত্রদল নেতারা। এ সময় ফটোসাংবাদিক এন আমিন রাসেলের মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ির নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জজকোর্টে সংবাদ সংগ্রহ শেষে স্থানীয় দৈনিক ভোরের আলো পত্রিকার ফটোসাংবাদিক এন আমিন রাসেল ও দৈনিক বরিশাল মুখপত্র পত্রিকার রিপোর্টার মনিরুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। হামলায় গুরুতর আহত দুই সাংবাদিক বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা দ্রুত বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন—
বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ি
মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম হাওলাদার মাসুম
মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমাস
জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন ও রাজিব আহমেদ
জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসাইন
ছাত্রদল সদস্য জুয়েল
তাদের সঙ্গে থাকা নাইম, শাওন, জাহিদ, শাহিন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আদালতের প্রধান ফটকে পুলিশের একটি গাড়িকে পথরোধ করে ছাত্রদল নেতারা। তারা আব্বাস নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের “ফ্যাসিস্ট” আখ্যা দিয়ে হামলা চালানো হয় এবং এন আমিন রাসেলের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত সোহেল রাঢ়ি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাংবাদিকরা “ফ্যাসিস্টদের” সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। অপরদিকে, ভুক্তভোগী আব্বাস হাওলাদার জানান, তার বাবা আ. রব হাওলাদার বিএনপির মুলাদী উপজেলা ওয়ার্ড কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন এবং গত বছর তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি সেই মামলার বাদী হিসেবে আদালতে গেলে ছাত্রদল নেতারা মামলা তুলে নিতে তাকে হুমকি দেয়।

বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বিএনপির বরিশাল মহানগরের সাবেক সদস্য সচিব এডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ ঘটনাস্থলে এসে বলেন, এই হামলার দায় বিএনপি নেবে না এবং বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, তারা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।